‘শিঞ্জিনী’ রহস্যভেদ
লিখেছেন লিখেছেন আতিকুর রহমান ফরায়েজী ২৬ মার্চ, ২০১৩, ০৫:৩১:০৭ বিকাল
বন্ধুরা, আজ আমি যে বিষয়টি নিয়ে অনুচ্ছেদটি লিখতে বসেছি, শিরোনাম দেখে তা হইতো তোমরা অগেই অনুধাবন করতে পেরেছো। হ্যাঁ, ‘শিঞ্জিনী’। এই শব্দটার সাথে হইতো অনেকেই পরিচিত আছো। শব্দটিকে আভিধানিক অর্থে না দেখার কারণে বন্ধুদের মনে অনেক জল্পনা-কল্পনার উদয় হয়েছে। আর আমাকে পড়তে হয়েছে বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে। যার অধিকাংই এসেছে ফেসবুক এবং ব্লগ থেকে। আর সেই কারণেই নামটির রহস্য আমার পক্ষে বেশিদিন আর লুকিয়ে রাখা সম্ভব হলো না। তোমাদের সামনে শিঞ্জিনী’র রহস্যভেদ করছি।
প্রথমত, ‘শিঞ্জিনী’ শব্দটিকে যদি আভিধানিক অর্থে দেখেন এর অর্থ হলো ‘নুপুর’। আশাকরি ‘নুপুর’ শব্দটির সাথেও সকলে পরিচিত। ‘শিঞ্জিনী’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেছিলাম আমার একটি কবিতার শিরোনামে, আজ থেকে দুই বছর বা তার থেকে কিছুদিন আগে। কবিতাটি প্রকাশ করার পর স্থানীয় কবি-সাহিত্যিকদের কাছে বেশ সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিলো আমাকে। সেখানে শব্দটি একটি ব্যক্তির নাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিলো। আর সেই কারণে আমার বন্ধুরাসহ ফেসবুক ও ব্লগের বন্ধুরা এখন আর শব্দটিকে আভিধানিক অর্থে দেখার কোন প্রয়াস পাচ্ছেনা। সেই কারণেই আমার সম্মুখে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে। যেমন, গতকালও আমার এক বড় ভাই (তিনি লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত আছেন। আর সেই সূত্রের আমার সাথে তার পরিচয়। তিনি ঢাকায় থাকেন) আমাকে বললেন, শিঞ্জিনীর সাথে তোমার বর্তমান অবস্থা কি? কথাটা শুনে রীতিমত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তারপর নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে তাকে বোঝালাম... থাক! তাকে কি বলে বুঝিয়েছিলাম, তা না হই নাই শুনলেন।
তারপর ‘শিঞ্জিনী’ শিরোনামে অনেকগুলো কবিতা লিখেছি-‘শিঞ্জিনী-২’, ‘শিঞ্জিনী-৩’, শিঞ্জিনী-৪’ এবং ‘শিঞ্জিনী-৫’। যার অনেকগুলোই ফেসবুক এবং ব্লগে প্রকাশ করেছি। আর চেষ্টা করেছি কোন কাগজে না প্রকাশের জন্য। তারপরও সমাজের মানুষেরা যে আর পিছিয়ে নেই, তা তারা বুঝিয়ে দিয়েছে। এগুলো লেখার পর আরো বেশি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছি। এখন সকলের ধারণা ‘শিঞ্জিনী’ সত্য সত্যই কোন ব্যাক্তির নাম এবং আমার জীবনে বিশেষ করে সাহিত্য জীবনে তার অনেক অবদান আছে। হ্যাঁ, কথাটি সত্, ‘শিঞ্জিনী’ এক জনের নাম। তবে কোন ব্যাক্তি বা কোন বস্তুর নাম নয় একথা বলতে দ্বিধা লাগে এবং আমার সাহিত্য জীবনে তার অবদান অতুলনীয়, যা জন্মান্তরেও শোধাবার নয়। প্রকৃতপক্ষে আজ থেকে দুই বছর বা তার বেশি সময় আগে এই নামটি আমার সাহিত্য জীবনে প্রবেশ করেছিলো আমার হাত ধরেই। তারপর থেকে এই নামটিকে নিজের মত করে মনে হয়েছে। যেখানে যেভাবে খুশি উপস্থাপন করেছি, আপন মহিমা দিয়ে চেষ্টা করেছি তাকে প্রতিষ্ঠা করার। এবং তা পেরেছিও।
আপনারা যদি লক্ষ করেন, দেখবেন, ‘শিঞ্জিনী’ কবিতাটি লেখার অনেকদিন পর অর্থাৎ দুই বছর পর ‘শিঞ্জিনী’ শিরোনামের অন্য কবিতাগুলো লেখা হয় এবং অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই। আর এটাই আমাকে সন্দেহের প্রধান কারণ। সত্য কথা বলতে কি, আমি শিঞ্জিনী নামটিকে একটি মায়াবিনী চরিত্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আমার সাহিত্যে শিঞ্জিনীর সাথে সকলের প্রিয়ার তুলানা করুনতো, দেখেতে পারবেন যে, ‘শিঞ্জিনী’ একটি কালউত্তীর্ণ নাম। যাকে সময়ের মধ্যে বাঁধা যায় না। সময়ের স্রতে মানুষের জীবনসীমা অল্প, কিন্তু; সাহিত্যের সীমা অন্তহীন। আর আমি ‘শিঞ্জিনী’কে সেই চলমান অন্তহীন সাগরের ভাসিয়েছি, যাতে সে অনন্তকালের জন্য বেঁচে থাকে। যারা আসবে ‘শিঞ্জিনী’কে নতুন করে চিনবে। প্রকৃতপক্ষে আমার ব্যাক্তিজীবনের ‘শিঞ্জিনীকেই আমি আমার সাহিত্য উপস্থাপন করার যে প্রয়াস করেছি, তা আজ আর কারো বুঝতে বাকী নেয়। সুতরাং আপনাদের সামনে একে গোপনরাখার মত মানষিকতা আর আমার নেই। আপনারা যা ধারণা করেছিলেন, তাই সত্য। ‘শিঞ্জিনী’ একজন ব্যাক্তির নাম এবং আমার জীবনে তার প্রবেশ ঘটেছে বেশিদিন নয়। মাত্র কয়েক মাস। এক্ষেত্রে একটি প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে দুবছর আগে কিভাবে কবিতাটি লিখেলেন ? এর উত্তর হলো- আমি যখন দুবছর আগে কবিতাটি লিখি তখন আমি যে মানষিকতা নিয়ে লিখেছিলাম যেখানে ‘শিঞ্জিনী’ সম্পূর্ণ কাল্পনিক নাম ছিলো। যাকে আমি চিনতাম না। কিন্তু দুবছর পর যখন শিঞ্জিনী যখন সত্য সত্যই আমার জীবনে কাবিতাটির মত উপস্থাপন হলো তখন আমি আর বসে থাকতে পারলাম না। শিঞ্জিনী সিরিজের বাকী কবিতুগুলো লিখে ফেললাম........
১২ চৈত্র ১৪১৯
বঙ্গাব্দ
বিষয়: সাহিত্য
১১৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন